ঢাকা ০২:৪৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৫, ১৮ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
ভালুকার সার্বিক উন্নয়নে ৫০০ কোটি টাকার মাস্টার প্ল্যান প্রণয়ন চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৫৪ তম জাতীয় সমবায় দিবস উদযাপন পূর্ব শত্রুতার জেরে গাছ কর্তন ও বাড়ি ঘরে হামলা গুরুতর আহত ০১ ফ্রি চিকিৎসাসেবা রাষ্ট্রের সকল নাগরিকের মৌলিক অধিকার : অধ্যক্ষ হেলালী তরজুমানুল কুরআন ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে কুরআন বিতরণ সোনাতলায় লটারীর মাধ্যমে ৬ পয়েন্টে ওএমএস ডিলার নিয়োগ “শিক্ষা শুধু মেধা বিকাশই করেনা বরং হৃদয়কে মানবিক করে” গফরগাঁওয়ে সৌদি সরকারের দুম্বার মাংস বিতরণ কেশবপুরে “শেকড়ের সন্ধানে”র আলোচনা ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত ৫০০০ হাজার শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে চট্টগ্রামে আন-নাবিল বৃত্তি পরিক্ষা সম্পন্ন

পাবনায় ইউনানী কারখানায় তৈরি হয় যৌন উত্তেজক সিরাপ

পাবনা প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০৪:২৯:৪৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ অক্টোবর ২০২৪ ২৬৯ বার পড়া হয়েছে

পাবনার জালালপুরে রত্নদ্বীপ রিসোর্টের পশ্চিম পাশে জয় ল্যাবরেটরিজ নামক একটি ইউনানী কারখানায় দিনের পর দিন চলছে অবৈধভাবে যৌন উত্তেজক সিরাপ তৈরির কর্মযজ্ঞ।

স্থানীয়দের অভিযোগ, পাবনা শহরের কিছু প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে এসব ওষুধ তৈরি করে আসছে। আর কারখানা মালিকের দাবী প্রশাসনের প্রায় সকল দপ্তরকে ম্যানেজ করেই চালু রেখেছেন কারখানাটি।

স্থানীয় বাসিন্দা জাহিদুল ইসলাম নামের একজন জানায়, জয় ল্যাবরেটরিজ নামক এই ফ্যাক্টরি শুরুর থেকেই অবৈধ পন্থায় যৌন উত্তেজক সিরাপ তৈরি করে আসছেন। মাঝখানে কিছুদিন আগে র‍্যাবের অভিযানে জরিমানাও গুনতে হয়েছে। তবে শুনেছি এখন এরা ওপর লেভেলের সকলকে ম্যানেজ করেই ব্যাবসা করছেন।

শাহিন প্রামানিক নামের একজন বলেন, ‘এখানে যে সব যৌন উত্তেজক সিরাপ তৈরি করা হয়, তার কোনো অনুমোদন নেই৷ আমি একদিন কোম্পানির মধ্য বেড়াতে গিয়ে দেখি সেখানে প্রচুর পরিমাণে অবৈধ যৌন উত্তেজক সিরাপ।’

মাসুদ রানা নামে একজন বলেন, ‘এখানে যৌন উত্তেজক সিরাপ তৈরি করা হয়৷ আমি এই কোম্পানিতে চাকরি করতাম। আমি খেয়াল করেছি মাঝে মাঝে যখন সাংবাদিক আসতো তখন আমাদের বলা হতো গেট খোলা যাবে না। কোনো সাংবাদিককে গেটে প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না। বিভিন্ন সময় অভিযান হয় একারণে ভয়েই আমি চাকরি ছেড়ে দিয়েছি।’

সোহেল রানা নামে একজন জানায়, এদের সিরাপগুলো সম্পূর্ণ অবৈধ ৷ এরা কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন জেলায় মালামাল পৌঁছে দেয় তারা৷ মাঝে মাঝে দেখি প্রশাসন আসে। তারা দেখেও যেনো না দেখার ভান করে।

এদিকে এসব বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পাবনার জালালপুর রত্নদ্বীপ রিসোর্টের পশ্চিম পার্শে জয় ল্যাবরেটরিজ ফ্যাক্টরিতে গেলে দেখা যায় শুধু যৌন উত্তেজক সিরাফ তৈরি হচ্ছে তেমনটা নয়। অনুমোদন বিহীন আরো অনেক সিরাফ তৈরি হচ্ছে এই কারখানায়। শুধু তাই নয় কারখানাটি চালু থাকলেও ল্যাবরেটরিতে ঝুলছে তালা। এছাড়া অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে হরদম উৎপাদন কার্যক্রম চলছে।

এদিকে কিছুক্ষন পরেই সংবাদকর্মীদের সংবাদ পরিবেশন না করতে বিভিন্ন মহল থেকে সুপারিশ আসতে থাকে। কারন প্রশাসনকে ম্যানেজ করার মতো সাংবাদিককেও ম্যানেজ করার প্রক্রিয়া চালায় তারা। ম্যানেজ না হলে ভবিষ্যতে দেখে নেওয়ার হুমকিও দেয় কর্তৃপক্ষ।

এসব বিষয়ে জয় ল্যাবরেটরিজ ফ্যাক্টরির মালিক  মি. রহিমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে পড়েন সাংবাদিকদের উপরে৷ তার দাবি ফ্যাক্টরিতে সাংবাদিক প্রবেশের কোনো নিয়ম নেই৷ তার ফ্যাক্টরিতে তিনি যা খুশি তাই তৈরি করতে পারবেন এতে কেউ কোন রকমের বাধা দিতে পারবে না।

এছাড়া জেলা পর্যায়ের সকল সরকারি প্রশাসন ম্যানেজ আছে তার কোনো সমস্যা নেই৷ পরে অবশ্য সাংবাদিকদের ম্যানেজ করার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠেন কোম্পানি মালিক মি.রহিম৷

এসব বিষয়ে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণের সহকারী পরিচালক মাহমুদ হাসান রনি বলেন, এর আগেও আমরা মিস্টার রহিমের জয় ল্যাবরেটরেজে জরিমানা করেছি। এখন আমরা যদি আবারো এমন অভিযোগ পাই তাইলে আমাদের আইনগত ব্যাবস্থা গ্রহণ করব।

পাবনা জেলার ঔষধ প্রশাসনের তত্ত্বাবধায়ক মো: রোকনুজ্জামান দায় সারাভাবে বলেন, যদি অনুমোদন বিহীন কোনো সিরাফ জয় ল্যাবরেটরিজ কর্তৃপক্ষ তৈরি করে থাকে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

পাবনায় ইউনানী কারখানায় তৈরি হয় যৌন উত্তেজক সিরাপ

আপডেট সময় : ০৪:২৯:৪৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ অক্টোবর ২০২৪

পাবনার জালালপুরে রত্নদ্বীপ রিসোর্টের পশ্চিম পাশে জয় ল্যাবরেটরিজ নামক একটি ইউনানী কারখানায় দিনের পর দিন চলছে অবৈধভাবে যৌন উত্তেজক সিরাপ তৈরির কর্মযজ্ঞ।

স্থানীয়দের অভিযোগ, পাবনা শহরের কিছু প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে এসব ওষুধ তৈরি করে আসছে। আর কারখানা মালিকের দাবী প্রশাসনের প্রায় সকল দপ্তরকে ম্যানেজ করেই চালু রেখেছেন কারখানাটি।

স্থানীয় বাসিন্দা জাহিদুল ইসলাম নামের একজন জানায়, জয় ল্যাবরেটরিজ নামক এই ফ্যাক্টরি শুরুর থেকেই অবৈধ পন্থায় যৌন উত্তেজক সিরাপ তৈরি করে আসছেন। মাঝখানে কিছুদিন আগে র‍্যাবের অভিযানে জরিমানাও গুনতে হয়েছে। তবে শুনেছি এখন এরা ওপর লেভেলের সকলকে ম্যানেজ করেই ব্যাবসা করছেন।

শাহিন প্রামানিক নামের একজন বলেন, ‘এখানে যে সব যৌন উত্তেজক সিরাপ তৈরি করা হয়, তার কোনো অনুমোদন নেই৷ আমি একদিন কোম্পানির মধ্য বেড়াতে গিয়ে দেখি সেখানে প্রচুর পরিমাণে অবৈধ যৌন উত্তেজক সিরাপ।’

মাসুদ রানা নামে একজন বলেন, ‘এখানে যৌন উত্তেজক সিরাপ তৈরি করা হয়৷ আমি এই কোম্পানিতে চাকরি করতাম। আমি খেয়াল করেছি মাঝে মাঝে যখন সাংবাদিক আসতো তখন আমাদের বলা হতো গেট খোলা যাবে না। কোনো সাংবাদিককে গেটে প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না। বিভিন্ন সময় অভিযান হয় একারণে ভয়েই আমি চাকরি ছেড়ে দিয়েছি।’

সোহেল রানা নামে একজন জানায়, এদের সিরাপগুলো সম্পূর্ণ অবৈধ ৷ এরা কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন জেলায় মালামাল পৌঁছে দেয় তারা৷ মাঝে মাঝে দেখি প্রশাসন আসে। তারা দেখেও যেনো না দেখার ভান করে।

এদিকে এসব বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পাবনার জালালপুর রত্নদ্বীপ রিসোর্টের পশ্চিম পার্শে জয় ল্যাবরেটরিজ ফ্যাক্টরিতে গেলে দেখা যায় শুধু যৌন উত্তেজক সিরাফ তৈরি হচ্ছে তেমনটা নয়। অনুমোদন বিহীন আরো অনেক সিরাফ তৈরি হচ্ছে এই কারখানায়। শুধু তাই নয় কারখানাটি চালু থাকলেও ল্যাবরেটরিতে ঝুলছে তালা। এছাড়া অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে হরদম উৎপাদন কার্যক্রম চলছে।

এদিকে কিছুক্ষন পরেই সংবাদকর্মীদের সংবাদ পরিবেশন না করতে বিভিন্ন মহল থেকে সুপারিশ আসতে থাকে। কারন প্রশাসনকে ম্যানেজ করার মতো সাংবাদিককেও ম্যানেজ করার প্রক্রিয়া চালায় তারা। ম্যানেজ না হলে ভবিষ্যতে দেখে নেওয়ার হুমকিও দেয় কর্তৃপক্ষ।

এসব বিষয়ে জয় ল্যাবরেটরিজ ফ্যাক্টরির মালিক  মি. রহিমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে পড়েন সাংবাদিকদের উপরে৷ তার দাবি ফ্যাক্টরিতে সাংবাদিক প্রবেশের কোনো নিয়ম নেই৷ তার ফ্যাক্টরিতে তিনি যা খুশি তাই তৈরি করতে পারবেন এতে কেউ কোন রকমের বাধা দিতে পারবে না।

এছাড়া জেলা পর্যায়ের সকল সরকারি প্রশাসন ম্যানেজ আছে তার কোনো সমস্যা নেই৷ পরে অবশ্য সাংবাদিকদের ম্যানেজ করার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠেন কোম্পানি মালিক মি.রহিম৷

এসব বিষয়ে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণের সহকারী পরিচালক মাহমুদ হাসান রনি বলেন, এর আগেও আমরা মিস্টার রহিমের জয় ল্যাবরেটরেজে জরিমানা করেছি। এখন আমরা যদি আবারো এমন অভিযোগ পাই তাইলে আমাদের আইনগত ব্যাবস্থা গ্রহণ করব।

পাবনা জেলার ঔষধ প্রশাসনের তত্ত্বাবধায়ক মো: রোকনুজ্জামান দায় সারাভাবে বলেন, যদি অনুমোদন বিহীন কোনো সিরাফ জয় ল্যাবরেটরিজ কর্তৃপক্ষ তৈরি করে থাকে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।