ঈশ্বরদীতে ভুল চিকিৎসায় নবজাতক ও প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় শাস্তির দাবীতে মানববন্ধন
- আপডেট সময় : ১২:০৫:২১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ মে ২০২৫ ১৪৬ বার পড়া হয়েছে
ভুক্তভোগী পরিবার, স্বজন ও কয়েকশো এলাকাবাসী এ কর্মসূচি আয়োজন করে। এ সময় ভূক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে ক্লিনিকের আবাসিক চিকিৎসক রাবেয়া বোসরী রোজির শাস্তির দাবি জানানো হয়। পাশাপাশি ক্লিনিকটি বন্ধের দাবি জানান তারা।
ভুক্তভোগী ফারুক বলেন, ক্লিনিকটিতে আবাসিক চিকিৎসক হিসেবে ডাক্তার রাবেয়া বোসরী রোজি নামে একজন দায়িত্বে রয়েছেন। বিগত তিন মাসে অপারেশন থিয়েটারের সিজারের নামে তার হাতে চারটি নবজাতক ও প্রসূতি মায়ের মৃত্যু হয়েছে। ভুল চিকিৎসার মাধ্যমে তার নবজাতক কন্যা শিশুকেও হত্যা করেছে। এখন আমার স্ত্রীর অবস্থাও ভালো না। এই রকম হাতুড়ি চিকিৎসকের মাধ্যমে আর যেন কোন নবজাতক ও প্রসূতির মৃত্যু না ঘটে সেই জন্য তার শাস্তি দাবী করছি। একই সঙ্গে হাতুড়ি ডাক্তার দিয়ে ক্লিনিকে অপারেশনসহ গর্ভবতি মায়েদের চিকিৎসা দেওয়ার সুযোগ যেনো আকলিমা ক্লিনিক আর না পায় সেই জন্য ক্লিনিকটিও বন্ধের দাবী জানাচ্ছি।
রাজীব পাটোয়ারী বলেন, ‘এই ক্লিনিক মানুষ মারার কল হিসেবে ঈশ্বরদীতে সুনাম অর্জন করেছে। কেননা এই ক্লিনিকে প্রতি মাসে ২ থেকে ৩ জন করে প্রসুতি ও নবজাতকের মৃত্যু হয়। তাই এই প্রতিষ্ঠান অনতিবিলম্বে বন্ধ হওয়া দরকার।’
ঈশ্বরদী সরকারী কলেজ শাখা ছাত্রদলের আহবায়ক মাহমুদুল ইসলাম শাওন বলেন, ‘ঈশ্বরদী উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা যায় এই ক্লিনিকে। কারণ এখানকার সকল ব্যবস্থাই খারাপ। তাই আমরা সিভিল সার্জনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই এই ক্লিনিকের সকল কার্যক্রম আজ থেকেই নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হোক।’
ডাক্তার রাবেয়া বোসরীর ভুল চিকিৎসার কারণে তার নবজাতক শিশুর মৃত্যু হয়েছে দাবি করে তদন্তসহ শাস্তির দাবিতে পাবনা সিভিল সার্জন অভিযোগ দায়ের করেছেন। একই সঙ্গে থানাতেও একটি এজাহার দায়ের করেছেন।
আকলিমা ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনেস্টিক সেন্টারের আবাসিক চিকিৎসক ডাক্তার রাবেয়া বোসরী রোজী বলেন, ভুল চিকিৎসায় এই ক্লিনিকে আমার হাতে কোন প্রসূতি ও নবজাতকের মৃত্যু হয়নি। আমার বিরুদ্ধে নবজাতকসহ প্রসূতির মৃত্যুর যে অভিযোগ দায়ের করা হচ্ছে তা সঠিক নয়।
ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আ স ম আব্দুন নুর বলেন, এই বিষয়ে ফারুক নামে এক ব্যক্তি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।
পাবনা সিভিল সার্জন মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, এই বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্তের জন্য ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার মো. আলী এহেসান বিজয়কে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন অনুসারে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার মো. আলী এহেসান বিজয় বলেন, এই বিষয়ে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও চিকিৎসক ডাক্তার ইব্রাহিম হোসেন, ডাক্তার কাবেরী শা ও আরএমও ডাক্তার সাহেদুল ইসলাম শিশির সমন্বয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কমিটিকে আগামী ৫ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।আকলিমা ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনেস্টিক সেন্টারের স্বত্ত্বাধিকারী ডাক্তার হোসনে আরা জলি বলেন, আকলিমা ক্লিনিক একটি অবকাঠামো। অবকাঠামোর তো কোন ভূল হতে পারে না। চিকিৎসক যদি কোনরুপ ভুল করে থাকে তা তদন্তে প্রমানিত হলে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ডাক্তারের বিরুদ্ধে অবশ্যয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।












